আজ বৃহস্পতিবার | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |২রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৪:২৮
রাজধানীর মিরপুরে একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি নিতে গিয়ে মবের শিকার হয়েছেন ছাত্রদলের ৬ নেতাকর্মী। শুধু তাই নয়, মব সৃষ্টি করে ওই ৬ ছাত্রদল নেতাকর্মীকে চাঁদাবাজ অ্যাখ্যা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রোববার বিকাল ৫টার দিকে মিরপুর ১৩ নম্বরের সাইক ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ঘটনাটি ঘটে।
মবের শিকার ওই ছাত্রদল নেতারা হলেন- রেজওয়ান উল করিম রিফাত, ফারহান শাহরিয়ার প্রান্ত, ফয়সাল মাহবুব, আতাউর রহমান নিরব, ইশতিয়াক খান, আরিয়ান ইসলাম। এর মধ্যে ফয়সাল মাহবুব ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক, রেজাওয়ানুল করিম রিফাত সাবেক ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক ও অন্যরা ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেজওয়ান উল করিম রিফাতের প্রিন্স নামে এক বন্ধু আছে। প্রিন্স ‘দেশবন্ধু’ নামে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে মার্কেটিং বিভাগে পার্ট টাইম জব করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেন প্রিন্স। আর ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিতে হয়।
ঘটনার দিন দুপুরের দিকে প্রিন্স তার মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য অনুমতি নিতে মিরপুর ১৩ নম্বরের সাইক ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবু হাসনাত মো. ইয়াহিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রিন্স নিজেকে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়ে অনুমতি দিতে অনুরোধ করেন।
একপর্যাায়ে প্রিন্সের রাজনৈতিক পরিচয় শুনে প্রিন্সিপালের রুমে থাকা সোহেল খন্দকার ফাহিম নামে একজন স্টাফ রেগে যান। তিনি প্রিন্সকে রাজনৈতিকভাবে নাজেহাল ও বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করেন। ফাহিম বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
পরে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে প্রিন্স সেখান থেকে বের হয়ে তার সহযোদ্ধা বন্ধুদের ঘটনাটি জানান। প্রিন্স তার ৬-৭ জন বন্ধু মিলে সাইক ইসস্টিটিউটে প্রবেশ করেন। সেখানে তার বন্ধুরা প্রিন্সিপালকে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দিতে পুনরায় অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মাঝে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়- ‘ছাত্রদলের পরিচয়ে কিছু লোক চাঁদাবাজি করতে এসেছে ও ম্যানেজমেন্টের ওপর হামলা করেছে’।
এতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হলে প্রিন্স ও তার বন্ধুরা হামলার শিকার হন। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে ৬ জনকে উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যান।
ঘটনার বিষয়ে ছাত্রদল নেতা রেজওয়ান উল করিম রিফাত বলেন, প্রিন্সের কাছে ঘটনা শুনে অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য পুনরায় অনুরোধ করতে সাইকের প্রিন্সিপালের কাছে যাই। সেখানে প্রিন্সিপালের রুমে তিনজন লোককে দেখি। এদের মধ্যে দুজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও একজন শিবির কর্মী। পরে শুনেছি তারা ম্যানেজমেন্টের লোক। এরা শিক্ষার্থীদেরকে উসকে দিয়ে মব সৃষ্টি করে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে চাঁদাবাজির গল্প সাজিয়েছে।
‘এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাঁশেরকেল্লা নামে একটি ফেসবুক ফেজ থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। আমরা সেখানে চাঁদাবাজি করতে সেখানে যাইনি। পুরো ঘটনা আমরা ফেসবুকে লাইভ করেছি। সেখানে সব প্রমাণ আছে’।
তিনি আরও বলেন, আমরা মবের শিকার হয়েছি। অনেক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য এসেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই বাছাই করে সেনাবাহিনী রাতেই আমাদের ছেড়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে বিষয়ে সাইক গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাইক ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালক আবু হাসনাত মো. ইয়াহিয়া বলেন, চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রিন্স নামে এক ছেলে আমাদের ইনস্টিটিউটে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করার জন্য অনুমতি নিতে এসেছিল। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে প্রিন্স ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ডেকে নিয়ে আসলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় এবং সাধারণ শিক্ষার্থী তাদেরকে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এসে তাদেরকে নিয়ে যায়। তবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজির জন্য এসেছিলেন বলে কিছু গণমাধ্যম ও ফেসবুকে যে খবর ছড়িয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে জানান ইয়াহিয়া।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সেক্রেটারি আকরাম আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় গতকাল রাতে আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। ছাত্রদলের কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়।
এ ব্যাপারে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, যতদূর জেনেছি সেনাবাহিনী ৬ জনেক মুচলেকা দিয়ে রাতেই ছেড়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ |
সূর্যোদয় | ভোর ৬:১২ পূর্বাহ্ণ |
যোহর | দুপুর ১২:৫৬ অপরাহ্ণ |
আছর | বিকাল ৪:১৬ অপরাহ্ণ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৭:৪০ অপরাহ্ণ |
এশা | রাত ৯:০৬ অপরাহ্ণ |