আজ শনিবার | ১৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি | বিকাল ৫:৪১

অন্তর্বর্তী সরকার, ঐকমত্য কমিশন দেশ ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে । শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করলো অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে, তখন সেটায় অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে তারা যে নোট অব ডিসেন্টগুলো দিয়েছিলেন, সেগুলো যেন সুপারিশে উল্লেখ করা হয়, তেমনটা বলেছিলেন। এ ব্যাপারে তারা আস্থা-বিশ্বাস রেখেছিলেন। কিন্তু সেই আস্থা, বিশ্বাসের সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি খুব পরিষ্কার বলতে চাই, আমরা নির্বাচন করবো, নির্বাচন করতে চাই। আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তীকাল সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেই ঘোষণার সঙ্গে একমত হয়ে আমরা নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচনকে আজকে বানচাল করার জন্য, সেই নির্বাচনকে বিলম্বিত করবার জন্য একটা মহল উঠে পড়ে লেগেছে। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কথা-বার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, গণভোট নির্বাচনের আগে করার কোনো সুযোগ এখন আর নাই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, সে কথা আমরা পরিষ্কার করে বলেছি। সেখানে দুইটা ব্যালট থাকবে একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। সুতরাং এই বিষয়ে কোনো দ্বিমত কারও থাকবে বলে আমি অন্তত মনে করি না।
গণভোটের দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যারা এই নিয়ে গোলমাল করছেন, রাস্তায় নেমেছেন। তাদের অনুরোধ করবো দয়া করে জনগণকে অনেক বিভ্রান্ত করেছেন অতীতে, অনেক করেছেন- সেগুলো আমি বলতে চাই না। একসময় এই দেশের সকল মানুষের চাহিদা ছিল পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হবে, আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) সেটার বিরোধিতা করেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। আজকে দয়া করে জনগণ যে নির্বাচন চায় সেই নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন না। যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে দেশের মানুষ কখনো তাদের ক্ষমা করে না, তারা ক্ষমা পায় না।
তিনি আরও বলেন, আপনারা (জামায়াতসহ আন্দোলনরত দলগুলো) ওখান থেকে সরে আসুন। নির্বাচন করুন। নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জনগণের মতামত প্রতিষ্ঠিত হোক- এটাই আমরা সকলে চাই। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। এই সংকট থেকে আমরা উত্তরণ ঘটাতে পারি, সেদিকেই আমাদের যাওয়া দরকার, আমাদের যেতে হবে।
ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা অবশ্যই আমাদের মিত্রদের নিয়ে যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর লড়াই-সংগ্রাম করেছি, একসঙ্গে কাজ করেছি- তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই আমরা সরকার গঠন করতে চাই এবং খুব পরিষ্কার কথা আমরা বলেছি, আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই নির্বাচনের পরে। সুতরাং এই ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কার। আসুন সবাই আমরা একসঙ্গে এ নির্বাচনকে উপলক্ষ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাই এবং নির্বাচনকে অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে করে আমাদের জনগণের একটা পার্লামেন্ট, জনগণের একটা সরকার গঠন করি।
বিএনপি’র বিরুদ্ধে সংস্কারবিরোধী অভিযোগ খণ্ডন করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যত সংস্কার সব বিএনপি’র হাত দিয়ে। আমরাই সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছি। আমরাসহ সকল রাজনৈতিক দল সংস্কার করতেই সনদে সই করেছে। আমাদের বক্তব্য খুব পরিষ্কার যে, আমরা অবশ্যই যে সংস্কারগুলোতে একমত হয়েছি, সেই সংস্কারগুলো অবশ্যই আমরা একমত হবো, আছি এবং সামনে ভবিষ্যতে সেগুলোই আমরা ইমপ্লিমেন্ট করবো যদি আমরা ক্ষমতায় আসি এবং আমরা যেগুলো পারিনি সেগুলো আমাদের ম্যানিফেস্টোতে নিয়ে এসে আমরা করবো।পর্যটন প্যাকেজ
এসময় আ স ম আবদুর রবের আশু রোগমুক্তি কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব। জেএসডি’র সহ-সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী জনশক্তি পার্টির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
যা হওয়ার হয়ে গেছে, সমস্যার সমাধান করুন : এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে সৃষ্ট সংকটের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশনকেই দায়ী করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে, যা হওয়ার হয়ে গেছে। আপনারা দয়া করে ওই সমস্যাগুলো সমাধান করেন, যাতে সবাই একসঙ্গে আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারি। এই সমস্যার সমাধান করে আমরা যেন জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারি, সেইপথে এগিয়ে চলুন। তিনি বলেন, আমরা যেমন অতীতে আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, ভবিষ্যতেও আপনাদের সঙ্গে থাকি। কিন্তু অবশ্যই আপনাদেরকে নিজেই যে জায়গা তৈরি করেছেন, তা পরিষ্কার করে দেবেন। শুক্রবার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশে যে সংকট তৈরি করেছে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ঐকমত্য কমিশন। আামি বিশ্বাস করি, এই সংকট কেটে যাবে। এদেশের মানুষ কখনই পরাজয়বরণ করে না, পরাজয়বরণ করেনি, পরাজয়বরণ করবে না। আমাদের সব সময় একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, দেশটা আমাদের- এই মানুষগুলো আমাদের এবং তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের সমস্ত যে চক্রান্ত, যে সমস্ত ষড়যন্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে হচ্ছে তাকে পরাজিত করতে হবে। এখানে আমরা বিভিন্ন দল করতে পারি, বিভিন্ন মত থাকতে পারে, বিভিন্ন পথ থাকতে পারে- কিন্তু একটা বিষয় আমরা সব সময় বাংলাদেশের ব্যাপারে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এবি পার্টির মঞ্জু সাহেব (মজিবুর রহমান মঞ্জু) একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, আমি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। এ জন্য আমি সব সময় মনে করি, আমাদের গত কয়েক বছরে একসঙ্গে কাজ করার যে একটা ঐক্য তৈরি হয়েছে এবং আমাদের মতো বৃদ্ধ এবং তাদের মতো তরুণ এবং আরও তরুণ যারা আছেন, তাদের মধ্যে একটা কাজের সংহতি তৈরি হয়েছে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, আজকে এখানে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছে। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে কোনোদিন হতাশাবাদী ছিলাম না, রাজনৈতিক জীবনেও হতাশাবাদী নই। কারণ আমি বিশ্বাস করি যে, ন্যায়ের জয় হবেই, সত্যের জয় হবেই। এসময় জোনায়েদ সাকির নেতৃত্ব গণসংহতি আন্দোলনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
গণসংহতি প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও গণসংহতি আন্দোলন নেতারা বক্তব্য রাখেন।
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫ | |
| ওয়াক্ত | সময় |
| সুবহে সাদিক | ভোর ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ |
| সূর্যোদয় | ভোর ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ |
| যোহর | দুপুর ১২:৪২ অপরাহ্ণ |
| আছর | বিকাল ৩:৫৫ অপরাহ্ণ |
| মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:১৯ অপরাহ্ণ |
| এশা | রাত ৭:৩৬ অপরাহ্ণ |