আজ সোমবার | ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি | সকাল ৮:৫২

রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কি কাজ করবে এবং দলের পরিকল্পনাগুলো নিয়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে নেতাকর্মীদের ছড়িয়ে পড়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার রাতে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জনপ্রত্যাশা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
নেতাকর্মী এবং মঞ্চে উপস্থিত বক্তাদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কথাগুলো, সব চিন্তা-ভাবনাগুলো কিন্তু এক। হয়তো বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে একটু ভিন্নভাবে আমরা উপস্থাপন করছি। কিন্তু আমাদের চিন্তা-ভাবনাগুলো এক। এতগুলো মানুষ যখন একইভাবে একই কথা, একই কাজ চিন্তা করছে। আমরা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি অবশ্যই ইনশাআল্লাহ আমরা কাজগুলো করতে সক্ষম হব। এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে যে, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে, রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে, রাজনৈতিক দলের অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে আমাদের এবং আমরা সকলে যারা বিশ্বাস করি যে, এই কাজগুলো করলে দেশের এবং দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে।
বিএনপি সরকার গঠন করলে কি কি করবে তার পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, একজন বক্তা এখানে বলেছেন যে, এয়ার কন্ডিশন ঘরের ভেতরে থাকলে হবে না। আমাদেরকে ছড়িয়ে পড়তে হবে। ইয়েস উনি সঠিক বলেছেন। জনগণের কাছে, সহজ ভাষায় আমজনতা বলতে যাদেরকে বোঝায়- প্রান্তিক জনগণ বলতে যাদেরকে বোঝায়, আপনাদের যার যেই উপায় আছে তার মাধ্যমে যদি আমাদের এই কথাগুলো, আমাদের এই কাজগুলো, আমাদের এই পরিকল্পনাগুলো পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে আমি মনে করি, দেশ এবং জাতির উপকার হবে। এই কাজগুলো করার জন্য কিন্তু জনসমর্থন প্রয়োজন এবং এই কাজগুলো করার জন্য আগামী সরকারকে সেভাবে শক্তিশালী ম্যান্ডেটের উপরে দাঁড়াতে হবে। যদি ম্যান্ডেট দুর্বল হয় তাহলে হয়তো অনেকগুলো কাজ করা সম্ভব হবে না। সেই শক্তিশালী ম্যান্ডেট যদি পেতে হয় অবশ্যই জনসমর্থনের প্রয়োজন।
তারেক রহমান বলেন, যারা আগামীতে নির্বাচন জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবেন। প্রথমে একটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে, সেটা হচ্ছে রুল অফ ল- মানুষের নিরাপত্তা বা আইনশৃঙ্খলা, এক বাক্যে যা আমরা বলি- এই জিনিসটাকে প্রথমেই বোধহয় আমাদের চেষ্টা করতে হবে, সর্বশক্তি দিয়ে এটাকে নিশ্চিত করার।
তিনি বলেন, যে কয়জন মানুষ এই ঘরে উপস্থিত আছেন। কমবেশি প্রত্যেকেই আপনারা ঢাকা শহরে থাকেন। প্রতিদিন আপনাদেরকে ঢাকা শহরের জ্যামটা পোহাতে হয়, ট্রাফিক জ্যাম- আমরা এখানে কেউ কিন্তু ট্রাফিক জ্যাম নিয়ে কথা বলিনি। কিন্তু এটা এমন একটা বিষয়, যেটি অবশ্যই আগামী সরকারকে এড্রেস করতে হবে। তাহলে যেভাবে এনার্জি, যেভাবে সময়, পরিশ্রম সবকিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে- যা প্রতিদিন পিছে নিয়ে যাচ্ছে জাতিকে। এটা সয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু এটা সয়ে গেলে তো চলবে না। আমাদেরকে এর সলিউশন বের করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ঢাকার শহরে প্রায় দেড় দুই কোটি মানুষ বাস করতো শুনতাম, এখন নতুন পরিসংখ্যান বলছে- এটা বোধহয় তিন কোটির কাছাকাছি প্লাস মাইনাস হবে। এত মানুষ ঢাকা শহরে বাস করে, তিন কোটি মানুষও যদি বসবাস করে, আড়াই কোটি মানুষও যদি বসবাস করে- আমাদেরকে ধরে নিতে হবে প্রতিদিন প্রায় দু’কোটি মানুষ অন্তত চলাফেরা করছে। এই দু’কোটি মানুষ কমবেশি স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করবে, এরকম পরিস্থিতি আমাদেরকে তৈরি করতে হবে, সেটি বোধহয় নেই। চলাফেরার জন্য এনাফ স্কোপ তাদের থাকতে হবে। বিভিন্ন ডিফারেন্ট কাইন্ড অফ ট্রান্সপোর্টেশন মোবিলিটি থাকতে হবে। সেই বিষয়টি আলোচিত হয়নি।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যদি আড়াই থেকে তিন কোটি মানুষ থেকে থাকে এই মুহূর্তে। একজন মানুষের প্রতিদিন প্রয়োজন হয় সব রকম কাজের জন্য প্রয়োজন হয় ১০০ লিটারের মতন পানি। এই মুহূর্তে ঢাকা শহরে যদি আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার আমাদেরকে বের করতে হয় প্রায় ১০০০ ফিটের কাছাকাছি আমাদেরকে নিচে যেতে হয়। আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার লেভেল এতটা নিচে চলে গিয়েছে। খুব কাছে যেটা নদী, বুড়িগঙ্গা নদী। এই বুড়িগঙ্গা নদীর পানি সম্পূর্ণ ব্যবহারের অযোগ্য। তার থেকে একটু দূরে শীতলক্ষা নদী। এটা মোটামুটি ব্যবহারের অযোগ্যের কাছাকাছি চলে এসেছে। তারপরও সেখান থেকে পানি এনে ফিল্টার করে বা পিউরিফাই করে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সেটার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে আসছে। এখনই যদি আমরা সচেতন না হই। নতুন করে যেই পানি প্রজেক্ট হচ্ছে, এটা মেঘনা নদী থেকে আনছে। তবে মেঘনা নদীর আশেপাশে এখন মিল ফ্যাক্টরি অনেক কিছু হচ্ছে এবং কয়েক বছর পরে এটিও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাবে।
তারেক রহমান বলেন, এই মুহূর্তে সবকিছু মিলিয়ে প্রায় আড়াই কোটি লিটারের মতন পানি সরবরাহ করছে যে প্রতিষ্ঠানগুলো। তিন কোটি লোকের মধ্যেই ঢাকা শহরে বসবাস করছে। হিসাব করলে গড়ে এক থেকে দেড় লিটার পানি আমরা পাচ্ছি- এর ভয়াবহতাটা আপনাদেরকে আমি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছি। এরকম একটি পরিস্থিতিকেও আমাদেরকে এড্রেস করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা যেটা গ্রহণ করেছি, আমরা যদি সেই পরিকল্পনাগুলোর ৪০ পারসেন্টও বাস্তবায়ন করতে পারি- আমার মনে হয় ওই সমস্যা থেকে বের করে আনতে পারব। কেন ইয়াং জেনারেশন ড্রাগের ভেতরে যাচ্ছে, একটা মানুষ যখন বয়সটা ওরকম থাকে ১৫ বছর, ১৬ বছর, ২০ বছর এবং ২৫ বছর- আপনার তাকে তো ওই স্পেসটা তৈরি করে দিতে হবে। যেখানে সে ডিবেট করবে, যেখানে সে গেমসে অংশগ্রহণ করবে, যেখানে সে আর্ট এন্ড কালচারে পার্টিসিপেট করবে। এই স্পেসগুলো তো বন্ধ। কাজেই তার শারীরিক শক্তি কোথায় সে ব্যয় করবে, তাকে স্পেসটা দিতে হবে। আমরা সেই স্পেসটা ক্রিয়েট করার চেষ্টা করছি। আমরা ইনশাআল্লাহ সুযোগ পেলে সেই স্পেসটা আমরা তৈরি করব। আমরা বিশ্বাস করি, আপনি শুধু শাস্তি দিয়ে বা অন্য কোন ট্রিটমেন্ট করে এটার সমাধান করা সম্ভব না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন প্রমুখ। এতে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং আইন অনুষদের সাবেক ডিন ড. বোরহান উদ্দিন খান।
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ | |
| ওয়াক্ত | সময় |
| সুবহে সাদিক | ভোর ৬:১২ পূর্বাহ্ণ |
| সূর্যোদয় | ভোর ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ |
| যোহর | দুপুর ১২:৫৪ অপরাহ্ণ |
| আছর | বিকাল ৩:৫৪ অপরাহ্ণ |
| মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:১৪ অপরাহ্ণ |
| এশা | রাত ৭:৩৫ অপরাহ্ণ |