আজ মঙ্গলবার | ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি | রাত ১০:০৭

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ১৭ই নভেম্বর। গতকাল বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার রায় ঘোষণার এই তারিখ ধার্য করেন। এটি হবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম রায়। শেখ হাসিনা ছাড়া বাকি দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি আবদুল্লাহ আল মামুন এই মামলায় অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো- গত বছরের ১৪ই জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান। হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা। রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ।
২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম মামলাটি (মিসকেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। গত বছরের ১৭ই অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। শুরুতে এই মামলায় শেখ হাসিনাই একমাত্র আসামি ছিলেন। প্রসিকিউশনের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৬ই মার্চ এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি হিসেবে তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় গত ১২ই মে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে গত ১লা জুন আসামিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। এই পাঁচ অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১০ই জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ২৩শে অক্টোবর মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
অঙ্গীকার করেছিলাম, যত শক্তিশালী হোক না কেন, প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়া হবে: তাজুল ইসলাম: আশা করছি ১৭ই নভেম্বর আদালত তার সুবিবেচনা, তার প্রজ্ঞা প্রয়োগ করবেন। একটি সঠিক রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটা ইতি ঘটাবেন। আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি আদালতের কাছে প্রেয়ার করেছি। আদালত তার সুবিবেচনা প্রয়োগ করবেন এবং আমাদের পক্ষ থেকে প্রেয়ার হচ্ছে যে এই অপরাধের দায়ে আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গতকাল রায়ের দিন ধার্যের পরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং-এ তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম, যারাই বাংলাদেশে যত শক্তিশালী হোক না কেন, যদি কেউ অপরাধ করে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করে, তাদের সঠিক পন্থায় বিচারের মুখোমুখি করা হবে এবং তাদের আইন অনুযায়ী যে প্রাপ্য, সেটা তাদের বুঝিয়ে দেয়া হবে। সেই প্রক্রিয়ায় আমরা একটা দীর্ঘ যাত্রা শেষ করেছি।
এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা দেখিনি: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনো অস্বচ্ছতা দেখি নাই। আমাকে কেউ কোনো রকমের ইন্টারাপ্ট করেনি (বাধা দেয়নি)। এর বাইরে কোনো অস্বচ্ছতা আছে কিনা, তা আমার জানা নেই বলে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণসহ সবকিছু সমাপ্ত করে রায়ের দিন ধার্য করায় ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি ও বিচারকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন করা সাক্ষীদের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আনতে সক্ষম হয়েছি। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন করা দালিলিক সাক্ষ্যে বিতর্ক (কন্ট্রোভার্সি) তৈরি করার চেষ্টা করেছি এবং বিভিন্ন সময় দালিলিক সাক্ষীর ওপর বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমার মক্কেলদ্বয় (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) খালাস পাবেন।সূত্র: মানবজমিন
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ | |
| ওয়াক্ত | সময় |
| সুবহে সাদিক | ভোর ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ |
| সূর্যোদয় | ভোর ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ |
| যোহর | দুপুর ১:০১ অপরাহ্ণ |
| আছর | বিকাল ৪:০২ অপরাহ্ণ |
| মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:২২ অপরাহ্ণ |
| এশা | রাত ৭:৪২ অপরাহ্ণ |