আজ শুক্রবার | ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি | সকাল ১০:৫৬

মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃকুড়িগ্রাম উলিপুর উপজেলার বুড়বুড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত মন্ডল হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে সিলেবাস অনুসরণ না করে গাইড বইয়ের অনুশীলন থেকে হুবহু প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে দেশের শিক্ষা আইনে স্পষ্টভাবে গাইড বা সহায়ক বই ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুধুমাত্র পাঠ্যবই নির্ভর পড়াশোনার কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানটি উল্টো পথে হাঁটছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
খতিয়ে দেখা বেশ কয়েকটি প্রশ্নপত্রে দেখা যায়, সৃজনশীল প্রশ্নগুলো হাতে লিখে পরে ছাপাখানায় ছাপানো হলেও উদ্দীপকসহ প্রায় সব প্রশ্ন অনুপম গাইড বই থেকে হুবহু নকল করা হয়েছে। বিশেষ করে দশম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ইসলাম শিক্ষা প্রশ্নপত্রের ‘ক’ বিভাগের প্রথম সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক গাইডের সঙ্গে হুবহু মিল থাকলেও শুধু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই প্রশ্নসহ গাইডের ২৯ নম্বর পৃষ্ঠার অনুশীলন মিলিয়ে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়। একইভাবে ‘ক’ বিভাগের দ্বিতীয় প্রশ্নের উদ্দীপক অনুপম গাইডের ৭৪ নম্বর পৃষ্ঠা এবং তৃতীয় প্রশ্ন ১০৩ নম্বর পৃষ্ঠার অনুশীলন থেকে নেওয়া হয়েছে। মিল পাওয়া গেছে আরও একাধিক প্রশ্নে। অভিযোগ রয়েছে নকল ঢাকতেই শুধু উদ্দীপকের নাম পরিবর্তন করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন অভিভাবকরা। শুধু ইসলাম শিক্ষা নয়, অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ এবং অষ্টমের বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রও গাইড অনুশীলন থেকে প্রস্তুত করা হয়েছে যার প্রমাণ স্বরূপ একাধিক নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া সিলেবাস অনুযায়ী প্রশ্ন তৈরি করা হয়নি বলেও তদন্তে সত্যতা মিলেছে। অভিভাবকদের প্রশ্ন গাইড অনুশীলন করেই যখন প্রশ্ন হয়, তখন সিলেবাসের দরকার কী? জানা গেছে, দশম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক, অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের শিক্ষক রুহল আমিন এবং বাংলা শিক্ষক মৃণাল কান্তি প্রশ্নপত্র তৈরিতে যুক্ত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের খসড়ায় প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে ছাপাখানা থেকে ছাপানোর কথা থাকলেও সেই খসড়াগুলোও গাইড থেকে বানানো হয়েছে এমন প্রমাণ মিলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষকও এসব অনিয়মের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিফার অভিভাবক নুর মোহাম্মদ বলেন, এইভাবে গাইড দেখে প্রশ্ন তৈরি করলে বাচ্চাদের মেধা বিকাশে কীভাবে সহায়ক হবে? অপর অভিভাবক চাঁদ মিয়া বলেন, আমি মেয়েকে স্কুলে দিয়েছি শিক্ষার জন্য। সেখানে যদি প্রশ্নই হয় অনিয়মে, তাহলে আমাদের সন্তান শিখবে কী? দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক দীপা রায় বলেন, হয়তো কোনো সহকারী শিক্ষক এমনটি করতে পারে। এটি বিধিমালার মধ্যে পড়ে না। বিষয়টি এখন জানলাম আমি ব্যবস্থা নেব। কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গাইড ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এটিকে উৎসাহিত করাও অপরাধ। বিষয়টি এখন জানতে পারলাম, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা এ ধরনের অনিয়ম চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থার আলো একদিন মুখ থুবড়ে পড়বে।
শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ | |
| ওয়াক্ত | সময় |
| সুবহে সাদিক | ভোর ৬:১১ পূর্বাহ্ণ |
| সূর্যোদয় | ভোর ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ |
| যোহর | দুপুর ১২:৫২ অপরাহ্ণ |
| আছর | বিকাল ৩:৫৩ অপরাহ্ণ |
| মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:১৩ অপরাহ্ণ |
| এশা | রাত ৭:৩৪ অপরাহ্ণ |