আজ মঙ্গলবার | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৬ই মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি | সকাল ১০:১৮
মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃবিগত আ’লীগ সরকার আমলে ১৬টি নদী দ্বারা বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলার নদী ভাঙন রোধে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর বামতীর, ডানতীর এবং নদী ব্যবস্থাপনার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ২ হাজার ২’শ ৫১ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হলে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এখন সমাপ্তির পথে। এই সকল ঠিকাদারী কাজ সমূহ শুরুতেই প্রভাবশালী আওয়ামীলীগের নেতাদের ছত্র ছায়ায় তাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজগুলো বাগিয়ে নেয়। কিন্তু বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে গেলে সারাদেশে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী ঠিকাদার ও আওয়ামীলীগ নেতারা বিভিন্ন ভাবে অপরাধে যুক্ত থাকায় কারাবন্দি অথবা দেশ থেকে পালিয়ে যায়। বেশকিছু সময়ের জন্য কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের গৃহিত কাজগুলি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় বিএনপি অথবা বিএনপি সমর্থিত কিছু ঠিকাদার নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আওয়ামীলীগের ঠিকাদারদের কাজগুলো মাঠ পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক অথবা টাকার বিনিময়ে ক্রয় করে নিজেরা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে। এই সকল কাজগুলোতে হাত বদল হওয়ার সাথে সাথে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সূচনা ঘটে।
দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে মাঠ পর্যায়ে প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে গরিমশি দেখায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যা ইচ্ছা তাই কাজ বাস্তবায়ন চলমান রাখে। উন্নয়ন কাজগুলো সুষ্ঠ ভাবে বাস্তবায়ন হলে এতে ভাঙনের কবল হতে রক্ষা পাবেন কয়েক হাজার বসত বাড়িসহ একাধিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ও বড় বড় হাট-বাজার। এতে কৃষি, স্বাস্থ্য, ব্যবসা মিলে উপকৃত হবেন জেলার ১৫ লাখ মানুষ। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলা সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ বাম ও ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ৭২ ভাগ, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী, উলিপুর উপজেলার ডান তীর ভাঙন রোধ প্রকল্পে ৯৮ ভাগ এবং কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের ৬১ ভাগ শেষ হয়েছে। পাউবো অফিস সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ বাম ও ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত) প্রায় ৬২৯ কোটি টাকা ব্যয় উন্নয়ন কাজের ৭২ ভাগ কাজ ইতোমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী, উলিপুর উপজেলার ডানতীর ভাঙন রোধ (প্রথম সংশোধিত) ৪৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯২ শতাংশ। একইভাবে রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারি হতে ফলুয়ার চরঘাট ও রাজিবপুর উপজেলার সদর হতে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত) ৪৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী সংরক্ষণ কাজের ৯৮ ভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে।
এদিকে কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদীর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের ৬৯২ কোটি টাকায় শুরু করা কাজটির ৬১ ভাগ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্প চারটির কাজ শুরু করে ২০১৯ সাল হতে এবং এই কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে চলতি বছরের ৩০ জুন।
এদিকে কুড়িগ্রাম জেলা সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নে ধরলা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বøকের নিচে তৃতীয় শ্রেণির ইটের খোয়া দিয়ে তৈরি কার্পেটিং দেয়া হয়েছে। কাজটি আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী ঠিকাদারের হলেও পরবর্তীতে বিএনপি সমর্থিত একজন ঠিকাদার নিজের প্রভাব ঘাটিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করছে। অপরদিকে অন্যান্য এলাকায় যেনতেন ভাবে প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের অনুপস্থিতিতে বøক নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখার চিত্র দেখা গেছে।
কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ বাম ও ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং দুধকুমার নদীর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা ধরলা প্রকল্পের প্রায় ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। সময়মতো বাকি কাজও শেষ করা হবে। কাজ শেষ হলে এর শতভাগ সুফল পাবেন ধরলা পাড়ের মানুষ। অপরদিকে দুধকুমার প্রকল্পের প্রায় ৬১ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে বাকি কাজও দূরত্ব শেষ করা হবে তিনি আশা করেন।
চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর ভাঙন রোধের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর ভাঙন রোধ প্রকল্পের প্রায় ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। বাকি কাজও শেষ করা হবে। এছাড়া পাউবোর জেলায় চলমান সব উন্নয়ন কাজ সঠিক সময়ে শেষ করার চেষ্টা আমরা অব্যহত রেখেছি।
মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৪:৪৮ পূর্বাহ্ণ |
সূর্যোদয় | ভোর ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ |
যোহর | দুপুর ১:০২ অপরাহ্ণ |
আছর | বিকাল ৪:২১ অপরাহ্ণ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৭:৪৯ অপরাহ্ণ |
এশা | রাত ৯:১৭ অপরাহ্ণ |