আজ রবিবার | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |২০শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি | দুপুর ১২:৫৭
বজ্রপাতে দেশের ৭ জেলায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, সুনামগঞ্জে ৩ জন, হবিগঞ্জে ১ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, নেত্রকোনায় ১ জন, মৌলভীবাজারে ১ জন, চাঁদপুরে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার এসব জেলায় ঘটে যাওয়া বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গত রোববার নেত্রকোনায় কলমাকান্দায় ১ জন এবং নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় এক নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অষ্টগ্রামে ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৪) নামে দুইজন এবং মিঠামইনে ফুলেছা বেগম (৬০) নামে একজন নারী নিহত হয়েছেন। অষ্টগ্রামে হাওরে বোরো ধান কাটার সময় বজ্রপাতে ইন্দ্রজিৎ দাস ও স্বাধীন মিয়া নিহত হয়। অন্যদিকে, মিঠামইনে বাড়ির পাশে ধানের খলায় কাজ করার সময় ফুলেছা বেগম নিহত হন। সোমবার সকালে বজ্রপাতে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ইন্দ্রজিৎ দাস অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত যতীন্দ্র দাসের ছেলে, স্বাধীন মিয়া একই উপজেলার খয়েরপুর আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের খয়েরপুর গ্রামের ইদ্রিছ মিয়ার ছেলে এবং ফুলেছা বেগম মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের রাণীগঞ্জ গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর স্ত্রী।
কুমিল্লার দুই উপজেলায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলার বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- উপজেলার দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া (কালীবাড়ি) এলাকার মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)। এদিকে, দুপুরের দিকে বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগুচ্ছ গ্রামে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- ওই এলাকার মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং একই এলাকার আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দু’জনই উপজেলার বড় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। হালকা মেঘলা আবহাওয়ায় তারা মাঠে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। আকস্মিক বজ্রপাতে মারাত্মক আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। হঠাৎ এই মর্মান্তিক ঘটনায় দুই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে দেবিদ্বারের সাহারপাড়ে বজ্রপাতে মিম (১০) নামে এক স্কুলছাত্রী নিহত হয়
সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দোয়ারাবাজার বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দোয়ারাবাজারেই বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন। উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের নরসিংপুর গ্রামের আক্কেল আলীর ছেলে মাছুম মিয়া (২০) ও একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে কায়েস মিয়া (২১) বজ্রপাতে মারা যান। সোমবার এ ঘটনা ঘটে। দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, তারা নদীতে বালু উত্তোলনের কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতের শিকার হন তারা। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতে আহত হন একই গ্রামের রুবেল মিয়া (২২)। এছাড়া, সুনামগঞ্জের শাল্লায় হাওরে বজ্রপাতে রিমন তালুকদার নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সকালে উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িজাঙ্গাল হাওরে এ ঘটনা ঘটে। রিমন তালুকদার (২০) শাল্লা উপজেলার ১নং আটগাও ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জাহেদ মিয়ার ছেলে, সে শাল্লা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে শাল্লার বুড়িজাঙ্গাল হাওরে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যায় রিমন। এসময় হঠাৎ বৃষ্টিপাত শুরু হলে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আগেই বজ্রপাতে রিমন তালুকদার ও তার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া একটি গরুর মৃত্যু হয়।
কলমাকান্দা উপজেলায় বজ্রপাতে দিদারুল হক নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের হাফসা (রা.) আনহু মহিলা মাদ্রাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন। নিহত দিদারুল ইসলাম উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধুনন্দ গ্রামে মধ্যপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি খারনৈ এলাকার হাফসা (রা.) আনহু মহিলা মাদ্রাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির শিক্ষক ছিলেন।
নেত্রকোনার মদনে বজ্রপাতে আরাফাত (১০) নামে এক মাদ্রাসার ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আরাফাত উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামের মো. আব্দুস ছালাম মিয়ার একমাত্র ছেলে। জানা গেছে, আরাফাত বাড়ির পাশের একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো। সোমবার ফজরের নামাজের পর নিজ বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতের ঘটনার স্বীকার হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
বানিয়াচং উপজেলায় হাওরে ধান কাটতে গিয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বজ্রপাতের আঘাতে তিনজন আহত হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় আহত দুই কৃষককে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বেলা ১টার দিকে বানিয়াচং ৫ নম্বর দৌলতপুর ইউনিয়নের পুবের হাওরে। জানা যায়, একই পরিবারের আপন ৩ ভাই দুরবাশা, ভূষণ দাশ ও সুধন্য দাশ সকালে বাড়ি থেকে ধান কাটার জন্য পুবের হাওরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুরবাশা (৩৫)। গুরুতর আহত অপর দুই ভাই।
বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস (৪৮) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মাখন ওই ইউনিয়নের অহিদাবাদ চা-বাগানের মৃত শংকুরা রবি দাসের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, সোমবার মাখন রবি দাস শ্রীধরপুর গ্রামের আলমাছ মিয়ার জমির ধান চুক্তিতে কেটে দিচ্ছিলেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলে মাখন মারা যান।
চাঁদপুরের কচুয়ায় বজ্রপাতের বিকট শব্দে বিশাখা রানী (৩৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বেলা ১১টায় উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের নাহারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিশাখা ওই এলাকার কৃষক হরিপদ সরকারের স্ত্রী। কচুয়া থানার ওসি আজিজুল ইসলাম জানান, বাড়ির পাশে স্বামীুস্ত্রী মিলে নিজ জমি থেকে ধান তুলছিলেন। এ সময় কাছাকাছি কোথাও বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়। এ সময় বিশাখা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।সূত্র : মানবজমিন
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ |
সূর্যোদয় | ভোর ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ |
যোহর | দুপুর ১২:৫৫ অপরাহ্ণ |
আছর | বিকাল ৪:১৭ অপরাহ্ণ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৭:৩৫ অপরাহ্ণ |
এশা | রাত ৮:৫৯ অপরাহ্ণ |